ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার মিথ্যা প্রতিবেদনের পর খাজরা পরিদর্শন না করে এডিসি (রেভিঃ) মতামত প্রদান এবং গদাইপুরে ভবন নির্মান চেষ্টার প্রতিবাদে আশাশুনিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে উপজেলার খাজরা বাজারে ইউনিয়নবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
খাজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস (পুরাতন ঘর) এর সামনের সড়কে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, আমিরুল ইসলাম, অবঃ সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান, ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম, ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান, ডাঃ আঃ মান্নান মোড়ল, প্রদীপ চক্রবর্তী, ইঞ্জিনয়ার জাকির হোসেন রতন ও হাফিজুর রহমান। বক্তারা বলেন, খাজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস ১০০ বছরক খাজরা বাজারে দুর্গাপুর ছোট মৌজায়, জেএল নং ১৩১, এসএ খং ৪৭, সাবেক দাগ ১৭১, জমির পরিমান (রেজিঃ ভূমি অফিসের নামে ১৫ শতকসহ) খাস জমিসহ ৪৫ শতক।
সহকারী জজ আদালত আশাশুনি, সাতক্ষীরার দেং ৭৮/৯৭ মামলার স্বাক্ষী তৎকালীন নায়েব শামছুর রহমানের স্বাক্ষে জানা যায়, দাতা মাতিঙ্গিনীর দেওয়া ১৫ শতক জমি ভূমি অফিসের নামে মিউটেশন রেকর্ড আছে। খাজরার পাশাপাশি ভূমি অফিস গদাইপুর নেওয়ার আবেদন করলে জেলা প্রশাসক এডিসি (রাঃ) কে তদন্তের দায়িত্ব দেন। কিন্তু তিনি সরেজমিন তদন্তে না এসে গোপনে তহশীলদার আঃ হাইয়ের পরামর্শে খাজরাকে ভাঙ্গনকুল দেখিয়ে গদাইপুরে ভবন নির্মানের পক্ষে মতামত দেন। এই মতামতের ভিত্তিতে গদাইপুরে খাস জমিতে ভূমি অফিস নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বক্তাগণ বলেন, এব্যাপারে হাইকোর্টে রিট পিটিশন আছে। দুর্নীতিবাজ তহশীলদার আঃ হাই তার নানার বাড়ি গদাইপুরে ভবন নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্র করে আসছে।
এরই অংশ হিসাবে ২০০৪ সালে তৎকালীন তহশীলদার শামছুর রহমান খাজরায় ভূমি অফিস ছিল এবং সেখানে ভবনের ছাদে ফাটল ধরার কারনে ঘর ভাড়া নিয়ে খাজরা বাজারে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বলে জানান। অথচ আঃ হাই নানার বাড়ি গদাইপুরে অফিস নিয়ে যেতে মিথ্যা রিপোর্ট দাখিল করেছেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় এডিসি (রেভিঃ) কে পরিদর্শনের দায়িত্ব দিলে, তিনি সরেজমিন খাজরায় পরিদর্শন না করে তহশীলদার আঃ হাইয়ের কূ-পরামর্শ ও সহযোগিতায় খাজরাকে ভাঙ্গনকুল হিসাবে আখ্যায়িত করে গদাইপুরে ভবন নির্মানের পক্ষে মতামত প্রদান করেন। রিপোর্টে তিনি খাজরা এলাকায় চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজসহ নানা অপমানজনক কথার অবতারনা করে খাজরার মানুষকে চরম ভাবে অপদস্ত করেছেন। অথচ খাজরায় কোন নদী ভাঙ্গন নেই, এখানে ভূমি অফিসের নামে জমি আছে, খাজরা বাজারে অফিসের স্থান, এর পার্শবর্তী এলাকা ইউনিয়ের ৯টি মৌজার মধ্যে সাড়ে ৬টি মৌজা অবস্থিত।
অপরদিকে গদাইপুরে ভূমি অফিসের নামে কোন জমি নেই, সেখানে খাস জমি এবং জমি এতটা নিচু যে সেখানে পুরো জমি হাটু পানিতে তলিয়ে আছে। গত বৃহস্পতিবার সেখানে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার লে আউটের নামে উপস্থিত হলেও পানিতে তলিয়ে থাকায় লেআউট করতে পারেননি। মুখে মুখে লেআউটের কথা বলে ২/৫ দিনের মধ্যে পানি সরিয়ে ভবনের স্থান নির্দিষ্ট করবেন বলে জানান। সেখানে সয়েল টেস্টের নামে হাস্যকর কাজ করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার অফিসের মাধ্যমে বা গ্রহনযোগ্যদের দ্বারা সয়েল টেস্ট করা হয়নি। সয়েল টেস্ট ইঞ্জিনিয়ারের অজ্ঞাতে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সয়েল টেস্ট করেছেন বলে সেখানে জানান। এলাকার শত শত মানুষ এডিসির রিপোর্টের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। দুর্নীতিবাজ তহশীলদার আঃ হাইকে অবিলম্বে অপসারন এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করে পুনরায় সরেজমিন তদন্তের দাবী জানান। সাথে সাথে খাজরার নির্দিষ্ট ভূমি অফিসের জায়গায় ভূমি অফিসের ভবন নির্মানের জোর দাবী জানিয়েছেন।
সম্পাদক : রেহেনা পারভীন
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Dainik Aporadh Barta