অনলাইন রিপোর্ট: নেপালের সদ্যঃসাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি দাবি করেছেন, ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণে তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারাতে হয়েছে। বিশেষত, ভারতের সঙ্গে সীমান্তবিরোধ ও ধর্মীয় ইস্যুতে মন্তব্য করার কারণেই তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার নিজের দলের মহাসচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
ওলি চিঠিতে লিখেছেন, “আমি যদি লিপুলেখ নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম, অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে কথা না বলতাম, তাহলে হয়তো এখনো ক্ষমতায় থাকতাম।” তিনি বিশ্বাস করেন, তার ক্ষমতা হারানোর মূল কারণ হলো ভারতের এই দাবির বিরোধিতা করা যে রাম ভারতের অযোধ্যায় জন্মেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রাম নেপালের বীরগঞ্জে জন্মেছিলেন।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ওলি বলেছিলেন, ভারতের অযোধ্যা আসলে ভুয়া এবং প্রকৃত অযোধ্যা নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভারতে জন্ম নেওয়া রাম কীভাবে নেপালের জনকপুরের সীতাকে বিয়ে করলেন, যেখানে প্রাচীনকালে দূরবর্তী স্থানে বিয়ের চল ছিল না। তার এই মন্তব্য ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে লিপুলেখ গিরিপথ এবং কালাপানি অঞ্চল নিয়ে বিরোধ চলছে। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্ত নির্ধারিত হলেও, কালী নদীর উৎসস্থল নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি রয়েছে। নেপাল এই তিনটি অঞ্চলকেই তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে। ২০২০ সালে ওলির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছিল, লিম্পিয়াধুড়া, লিপুলেখ ও কালাপানি নেপালের অংশ। ভারত ওই অঞ্চলে রাস্তা নির্মাণ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করার নেপালের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ক্ষমতা হারানোর পরও কেপি শর্মা ওলি তার অবস্থানে অটল রয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করাই ছিল তার প্রধান ‘অপরাধ’। বর্তমানে তিনি কাঠমান্ডুর শিবপুরি সেনা ব্যারাকে আশ্রয়ে আছেন।